আজ পবিত্র শবেবরাত
নিউজ টাইমস ২১ ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০২১, ১০:৫৩:৫১ অপরাহ্ন
পবিত্র শবেবরাত আজ। যথাযোগ্য ধ’র্মীয় ম’র্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দেশের মু’সলিম সম্প্রদায় দিনটি পালন করবে। এ উপলক্ষে সারা দেশে ম’সজিদ ও মাদরাসাগুলোয় বিভিন্ন আয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া ইস’লামিক ফাউন্ডেশন মাগরিবের নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় ম’সজিদে ওয়াজ মাহফিল ও বিশেষ মুনাজাতের আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে আজ পত্রিকা অফিস এবং আগামীকাল সরকারি অফিস-আ’দালত বন্ধ থাকবে।
হিজ’রি ১৪ শাবান দিবাগত রাতে পবিত্র শবেবরাত বা ‘লাইলাতুল বারাআত’ পালন করা হয়। ফারসি শব্দ ‘শব’ ও আরবি শব্দ লাইলাতুল অর্থ রাত। আর বারাআত অর্থ মুক্তি। এ জন্য এ রাতকে মুক্তির রজনীও বলা হয়। কেননা এ রাতে মহান আল্লাহ মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া অসংখ্য মানুষকে ক্ষমা করে দেন ম’র্মে সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে। এ জন্য এ রাতে মহান আল্লাহর কাছে পাপ থেকে মুক্তি কা’মনা করে প্রার্থনা করা হয়। অনেকেই এ রাত নফল নামাজ ও কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে পার করেন। এ ছাড়াও মা-বাবাসহ আত্মীয়দের কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন অনেকেই।
পবিত্র শবেবরাতের পবিত্রতা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন নিশ্চিত করতে, আতশবাজি, পট’কাবাজি, অন্যান্য ক্ষতিকারক ও দূষণীয় দ্রব্য বহন এবং ফোটানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পু’লিশ। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে পু’লিশ।
ইস’লামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় ম’সজিদ বায়তুল মোকাররমে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে (বাদ মাগরিব) ‘শবেবরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ওয়াজ মাহফিল শেষে বাদ এশা মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। ওয়াজ ও মুনাজাত করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় ম’সজিদের সিনিয়র পেশ ই’মাম মুফতি মা’ওলানা মিজানুর রহমান।
শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহ: বলেন, পনেরো শাবানের রাতের ফজিলত স’ম্পর্কে একাধিক ‘মা’রফু’ হাদিস ও ‘আসারে সাহাবা’ বর্ণিত রয়েছে। এগুলো দ্বারা ওই রাতের ফজিলত ও ম’র্যাদা প্রমাণিত হয়। সালাফে সালেহিনের কেউ কেউ এ রাতের নফল নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হতেন। আর শাবানের রোজার ব্যাপারে তো সহিহ হাদিসগুলো রয়েছে। অবশ্য শুধু পনেরো তারিখের দিনে রোজা রাখার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া মাকরূহ। পনেরো তারিখের সাথে দু-এক দিন মিলিয়ে নেয়া উত্তম। আর এই দিন বা রাতে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা এবং সাজসজ্জার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া ইত্যাদি বিদআত ও ভিত্তিহীন। এ রাতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সাধারণ নফল নামাজের মতো নফল নামাজ পড়া উচিত। হাদিসের মাধ্যমে শুধু এতটুকুই প্রমাণিত হয়, এ রাতের নফল নামাজ হবে লম্বা, সিজদা হবে দীর্ঘ দীর্ঘ। দুই রাকাত করে যত ইচ্ছা পড়া যাবে; রাকাত সংখ্যাও নির্দিষ্ট নেই; কোনো নির্দিষ্ট সূরার সীমাবদ্ধতাও নেই।
ই’মাম যাইনুদ্দীন ইবনে রজব দামেস্কি বলেন, একজন মুমিন বান্দার উচিত, এ রাতে জিকির ও দোয়ার জন্য পুরোপুরি অবসর হওয়া। প্রথমে খাঁটি মনে তওবা করবে; এরপর মাগফিরাত ও ক্ষমা প্রার্থনা করবে; আপদ-বিপদ দূর হওয়ার জন্য দোয়া করবে এবং নফল নামাজ পড়বে। সবসময় সেসব গুনাহ থেকে বিরত থাকবে যেগুলো ওই রাতের বিশেষ ফজিলত (ব্যাপক ক্ষমা) থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে। যেমন- শিরক, হ’ত্যা, জিনা, হিং’সা প্রভৃতি।
ই’মাম ইবনুল হাজ্জ বলেন, এ রাত যদিও শবে কদরের মতো নয়; কিন্তু এর অনেক ফজিলত ও বরকত রয়েছে। আমাদের পূর্বসূরি পুণ্যাত্মা’রা এ রাতের যথেষ্ট ম’র্যাদা দিতেন এবং এর যথাযথ হক আদায় করতেন। কিন্তু আজ সাধারণ লোকেরা বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উল্টো করে ফেলেছে। তারা রসম-রেওয়াজ ও কুসংস্কারের পেছনে পড়ে এর খায়ের বরকত ও কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।