ইতালির পর্যটন শিল্পে ধস, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি প্রবাসীরা
নিউজ টাইমস ২১ ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মার্চ ২০২১, ৭:২৩:১১ অপরাহ্ন
ইতালিতে করোনা মহামা’রি এক বছরেরও বেশি সময় অ’তিক্রম করেছে। দেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাত পর্যটন। ইতালিতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি পর্যট’কের আগমন ঘটে ।
এতে জিডিপির যোগান আসে প্রায় ১৪ শতাংশ । যদিও করোনার পর এখাতের ধস নেমেছে ৮০ শতাংশ। ইতালিতে প্রায় দুই লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির অধিকাংশই কর্মক্ষেত্রে পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ৬ কোটি ইতালিয়ানের দেশে গত দশ বছরে গড়ে পর্যট’ক এসেছে সাড়ে ছয় কোটি। সংখ্যার বিচারে বিশ্বে ৫ম আর অর্থের হিসেবে তৃতীয় শক্তিশালী পর্যটন শিল্পের দেশ ইতালি। তিন হাজার বছরের পুরনো রোমের ঐতিহাসিক নিদর্শন, সমুদ্রে ভাসমান শহর ভেনিস, সাহিত্য সংস্কৃতির রেনেসাঁর শহর ফ্লোরেন্স, শিল্প শহর মিলান, দক্ষিণের সান সিটি নেপলস কিংবা সবুজে ঘেরা সিসিলির কোথায়ও নেই পর্যট’কদের আনাগোনা।
২০২০ সালে ইতালিতে পর্যট’ক এসেছে মাত্র ২ কোটি ৫৫ লক্ষ এবং তারা ইতালিতে গড়ে মাত্র এক রাত করে সময় কাটিয়েছেন। ব্যাংক অব ইতালি তথ্য মতে ১৭.৪৫ বিলিয়ন ইউরো আয় হয়েছে পর্যটন শিল্প থেকে ২০২০ সালে যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৬০ শতাংশ কম। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডেমোস্কোপিকা মনে করেন পর্যটন শিল্পে প্রায় ১ লাখ ছোটবড় প্রতিষ্ঠান এই মুহূর্তে দেওলিয়া হবার ঝুঁ’কিতে রয়েছে এবং ৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।, এতে ক্ষতির মধ্যে পরবে হাজার হাজার বাংলাদেশি মালিকানা প্রতিষ্ঠান ও হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মজীবী মানুষ।
গত এক বছরে ভেনিস একটি ভূতের শহর হয়ে দাঁড়িয়েছে! লিগুরিয়ার উপকূলে জেটসেটের বর্ণময় খেলার মাঠ, বিশ্বের বিলাসি ধনীদের প্রিয় পোর্টোফিনো, মিলানের মনোরম লেক কোমোর উপকূল বরেন্না, ফ্লোরেন্স ও রোমের ক্লোসিও কিংবা পাহাড়ের চূড়ায় বরফে ঢাকা অনিন্দ্য সুন্দরী কর্তিনা। সবখানে এখন নির্জন নিরবতা। করোনা যেন দখলে নিয়েছে ইতালির ঐতিহ্যবাহী পর্যটন শিল্পকে। এতে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।
বর্তমানে ইতালিতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে নাট’কী’য় অবনতি ঘটেছে। ইতালির ইউনিয়ন চেম্বার অব কমা’র্সের সভাপতি কার্লো সাঙ্গাল্লি ও ইতালির জাতীয় পর্যটন সংস্থার পরিচালক জর্জিও পামুচিক সতর্ক করে দিয়েছেন এই বলে যে , আগামী ২০২৩ সালের আগে ইতালির পর্যটন শিল্পে সুবাতাসর সম্ভাবনা নেই। সেই সঙ্গে ভেনিস ও ফ্লোরেন্সের মেয়রগণ গত সপ্তাহে শহর দুটিতে বিশেষ অর্থ সাহায্যের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে আশার কথা হলো গত বুধবার ইউরোপের জনপ্রিয় ল- কস্ট বিমান পরিবহন ‘রায়ান এয়ার’ বলেছেন, আগামী গ্রীষ্মে ইতালি ও ইংল্যান্ডের মধ্যে বিমান চলাচলের সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করবে তারা।
অ’পর এক বার্তায় ইতালির পর্যটন মন্ত্রী মাসিমো গারাবালিয়া বলেছেন, করোনা সংক্রমণের হার কমা’র সঙ্গে সঙ্গে সব পর্যটন ক্ষেত্রগুলো পুনরায় চালু করা হবে। এতে আশাবাদী স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।