ড্রামে তরুণীর লা’শ: প্রে’মিক পু’লিশ কনস্টেবলসহ গ্রে’প্তার ৪
নিউজ টাইমস ২১ ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে ডোবায় পড়ে থাকা ড্রামের ভেতর থেকে উ’দ্ধার তরুণীর লা’শের পরিচয় মিলেছে। গ্রে’প্তারের পর হ’ত্যাকা’ণ্ডের মূলহোতা ওই তরুণীর প্রে’মিক লা’শের পরিচয় জানান।
নি’হত ওই তরুণীর নাম ননিকা রানী রায় (২৪)। তিনি ঠাকুরগাঁও সদরের মিলনপুর গ্রামের বাসিন্দা। ননিকা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতা’লের নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে সদ্য লেখাপড়া শেষ করেছেন। সর্বশেষ তিনি মহানগরীর একটি ক্লিনিকে নার্স হিসেবে কর্ম’রত ছিলেন। মহানগরীর পাঠানপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন ননিকা।
রোববার রাতে তার লা’শ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে রোববার ভোরে পু’লিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা ওই তরুণীর খু’নের সঙ্গে সম্পৃক্ত পু’লিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারকে (৪৩) গ্রে’প্তার করেছে। পরে নিমাইয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দিনভর অ’ভিযান চালিয়ে মাইক্রোবাসচালকসহ তার আরও তিন সহযোগীকে গ্রে’প্তার করে পিবিআই।
এ ছাড়া এ সময় জ’ব্দ করা হয় লা’শ বহনকারী মাইক্রোবাসটিও (ঢাকা মেট্রো গ-১৩-১৮২৮)।
পিবিআই রাজশাহীর অ’তিরিক্ত পু’লিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গ্রে’প্তার পু’লিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারের বাড়ি পাবনার আতইকুল্লা উপজে’লার চরাডাঙ্গা গ্রামে। তিনি রেল পু’লিশের (জিআরপি) রাজশাহী থা’নায় কর্ম’রত। রাজশাহী পিবিআইয়ের একটি টিম রোববার সকালে নাটোরের লালপুরে বোনের বাড়ি থেকে নিমাইকে গ্রে’প্তার করে। এর পর তিনি নি’হত তরুণীর পরিচয় নিশ্চিত করেন।
এ ছাড়া গ্রে’প্তারকৃত নিমাইয়ের সহযোগীরা হলেন— রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ আদারিপড়ার কবির আহম্মেদ (৩০), শ্রীরামপুর এলাকার সুমন আলী (৩৪) এবং মাইক্রোবাসচালক বিলশিমলা এলাকার আব্দুর রহমান (২৫)। পু’লিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের গ্রে’প্তার করা হয়।
পিবিআই জানায়, মহানগরীর তেরখাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে ওই তরুণীকে হ’ত্যা করা হয়। ওই বাড়িটি জিআরপির কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র গত ৬ এপ্রিল ভাড়া নেন। তার স্ত্রী’ও পু’লিশ কনস্টেবল। তিনি বগুড়ায় কর্ম’রত। রোববার বিকালে পিবিআই সদস্যরা ওই বাড়িতে ত’দন্তে যায়।
পিবিআই আরও জানায়, কনস্টেবল নিমাই হ’ত্যার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ছয় থেকে সাত বছর ধরে ননিকা রানীর সঙ্গে তার প্রে’মের স’ম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে শারীরিক স’ম্পর্কও হয়। সম্প্রতি ননিকা বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ কারণে তাকে হ’ত্যার পর ড্রামে লা’শ ভরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পিবিআই।
অ’তিরিক্ত পু’লিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ জানান, গ্রে’প্তারকৃতদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নি’হত তরুণীর প্রে’মিক কনস্টেবল নিমাই তার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। গ্রে’প্তারকৃতরা হ’ত্যাকা’ণ্ডের সঙ্গে যু’ক্ত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
আজ সোমবার তাদের আ’দালতে উঠানো হবে। আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রি’মান্ডের আবেদন জানানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিমাই চন্দ্র সরকার গত সাত বছর ধরে রাজশাহী জিআরপি থা’নায় কর্ম’রত। এর আগে তিনি রাজশাহী মহানগর পু’লিশে (আরএমপি) কর্ম’রত ছিলেন। আরএমপির গোয়েন্দা শাখায় চাকরি করার সময় অফিসের পাশের বাড়ির এক কলেজছা’ত্রীকে প্রে’মের ফাঁদে ফেলে ন’’গ্ন ভিডিও তৈরি করেন তিনি। ভিডিওটি কম্পিউটারের দোকান থেকে সেই সময় মানুষের হাতে হাতে চলে যায়।
এ কারণে সেই সময় তাকে বরখাস্ত করা হয়। পরে নানা কৌশলে চাকরি ফিরে পেয়ে রেল পু’লিশে যোগ দেন নিমাই।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল মহানগরীর উপকণ্ঠ বাইপাস সড়কের সিটিহাটের কাছে একটি ডোবায় ড্রামের মধ্যে এক তরুণীর লা’শ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
পরে খবর পেয়ে শাহমখদুম থা’না পু’লিশ গিয়ে লা’শ উ’দ্ধার করে ময়নাত’দন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ম’র্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় শাহমখদুম থা’নার এসআই আমিনুল ইস’লাম বাদী হয়ে অ’জ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি মা’মলা করেন।