ডা. জেনিকে ‘পাপিয়া’ বলা ওসির শাস্তি দাবি
নিউজ টাইমস ২১ ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১:২৪:১৬ অপরাহ্ন
এলিফ্যান্ট রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাঈদা শওকত জেনির গাড়ি আ’ট’কে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তাকে যৌ’ন ব্যবসায় জ’ড়িত পাপিয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে বলে অ’ভিযোগ করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিজ-এফডিএসআর।
একে চরম অবমাননাকর উল্লেখ করে নিউমা’র্কেট থা’নার ভা’রপ্রাপ্ত কর্মক’র্তা এস এ কাইয়ুমের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি নারীদের সঙ্গে কথা বলবার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী পু’লিশ নিয়োগেরও দাবি করে তারা।
রোববার কঠোর লকডাউনের পঞ্চ’ম দিনে বাটা সিগন্যালে ডা. জেনির গাড়ি আ’ট’কে তার পরিচয়পত্র দেখতে চান নিউমা’র্কেট থা’নার ওসি। ওই গাড়িতে এই চিকিৎসকের কর্মস্থল বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের স্টিকার লাগানো ছিল। তার গায়েও ছিল অ্যাপ্রোন। তবে ওসি চাপ দিতে থাকলে তর্কাতর্কি হয়।
এর এক পর্যায়ে ওসি কাইয়ুম তাকে ভু’য়া ডাক্তার বলে পাপিয়ার সঙ্গে তুলনা করেন বলে কাছে অ’ভিযোগ করেছেন ডা. জেনি।
এই চিকিৎসক একজন রেডিওলজিস্ট। রাতে রেডিওলজিস্টদের সংগঠন এফডিএসআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পতিতাবৃত্তির পৃষ্ঠপোষকতার অ’ভিযোগে গ্রে’প্তার করা পাপিয়ার সাথে পু’লিশ ডা. জেনির তুলনা করেছে, যা একজন নারী চিকিৎসকের জন্য চরম অবমাননাকর।’
গত বছরের শুরুতে রাজধানীর একটি অ’ভিজাত হোটেল থেকে গ্রে’প্তার করা হয় শামীমা নূর পাপিয়াকে যিনি যৌ’ন ব্যবসা করতেন বলে অ’ভিযোগ আছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের প্রথম দিনেই প্রচুর সংখ্যক চিকিৎসক ডিউটিতে যাবার পথে একাধিক স্থানে পু’লিশ কর্তৃক হে’নস্তার শিকার হবার প্রেক্ষিতে এফডিএসআরের প্রতিবাদের মুখে পু’লিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ ধরণের হয়’রানি বন্ধের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।
‘তারপর থেকে এ ধরনের হয়’রানির সংখ্যা কমলেও লকডাউনের পঞ্চ’ম দিনে, রোববার হাসপাতাল থেকে ডিউটি শেষে ফেরার পথে এলিফ্যান্ট রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি একদল পু’লিশ কর্তৃক হে’নস্তার শিকার হয়েছেন। ইতিমধ্যে এই ঘটনার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেভাবে আংশিক ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাই’রাল হয়েছে।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোভিড রোগীর চিকিৎসা শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পথে পু’লিশ ডা. সাঈদা শওকত জেনির গাড়ি থামিয়ে তার কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চায়। এ সময় নিজের পরিচয় ও গাড়িতে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতা’লের পরিচালক কর্তৃক ইস্যুকৃত মুভমেন্ট পাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত স্টিকার ও বিএসএমএমইউর লোগোসহ ডাক্তারের নামাঙ্কিত অ্যাপ্রোন দেখালে সবকিছুকে ভুয়া বলে পু’লিশ ডা. জেনিকে চরমভাবে উত্যক্ত করে।’
এর মাধ্যমে পু’লিশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চিকিৎসক সমাজকেও হেয় করেছে বলেও অ’ভিযোগ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পু’লিশ ডা. জেনির কাছে অন্যায়ভাবে মুভমেন্ট পাস চেয়েছে। অথচ ডাক্তারদের মুভমেন্ট পাস লাগবে না বলে ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে।
‘চিকিৎসকের পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী বীর বিক্রমের কন্যার পরিচয় দেবার পরেও পু’লিশ যেভাবে উদ্ধত ভাষায় কথা বলেছে, তা যুগপৎ আমাদের ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ করেছে। আম’রা ভাবতেই পারি না, একজন মহিলা চিকিৎসককে এতগুলো পুরুষ পু’লিশ মিলে এমন ঔদ্ধত্যের সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে?
‘পু’লিশের এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সাহসের সঙ্গে রুখে দাঁড়ানোয়’ ডা জেনিকে অ’ভিনন্দনও জানায় তার সংগঠন।