হাসপাতাল থেকে পালানো সেই ভা’রতফেরত ১০ করো’না রোগীকে ধরেছে পু’লিশ
নিউজ টাইমস ২১ ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ এপ্রিল ২০২১, ১১:১০:২৫ অপরাহ্ন
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে দশজন করো’না রোগী কর্তৃপক্ষের অনুমতি’ ছাড়াই চলে গেছে। এদের মধ্যে সাতজন ভা’রতফেরত করো’না পজিটিভ। রোববার তাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। ভা’রতফেরত সাতজন চার জে’লার বাসিন্দা। তাদের সবাইকে আবার ফেরত আনা উদ্যোগ নিয়েছে পু’লিশ। এদের মধ্যে একজনকে হাসপাতা’লে আনা হয়েছে।
করো’নার ভা’রতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে ‘পালিয়ে যাওয়া’ রোগীরা যদি ভা’রতীয় ভ্যারিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। রোগী ‘পালানোর’ ঘটনায় তোলপাড় চলছে। সোমবার ‘পালিয়ে’ যাওয়া রোগীদের উ’দ্ধার করে আবারও হাসপাতা’লে ভর্তির উদ্যোগ নিয়েছে পু’লিশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যশোর জে’লা করো’না প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জে’লা প্রশাসক তমিজুল ইস’লাম খান বলেন, হাসপাতা’লের করো’না ওয়ার্ডের ১০ জন রোগী ছাড়পত্র না নিয়ে চলে গেছে। এদের মধ্যে সাতজন ভা’রতফেরত করো’না রোগী রয়েছে। ওই সাতজনের মধ্যে খুলনার তিন জন, সাতক্ষীরার দুই ও যশোর ও রাজবাড়ি জে’লার একজন করে রয়েছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতা’লের রেজিস্টারে ওই ১০ জনের নাম ঠিকানা ছিল। তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জে’লা প্রশাসক, পু’লিশ সুপার ও সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, কয়েকদিনে যশোর জেনারেল হাসপাতা’লের তৃতীয় তলায় করো’না ওয়ার্ডে ১০জন করো’না পজিটিভ রোগী ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সাতজন ভা’রত ফেরত ছিলেন। তাদেরকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতা’লে পাঠানো হয়। তারা সবাই পালিয়ে গেছে।
পালিয়ে যাওয়া রোগীরা হলেন-যশোর সদর উপজে’লার পাঁচপাবাড়িয়া গ্রামের রবিউলের স্ত্রী’ ফাতেমা (১৯), একই গ্রামের একরামুল কবীরের স্ত্রী’ রুমা (৩০), যশোর শহরের বারান্দীপাড়া এলাকার বিশ্বনাথের স্ত্রী’ মনিমালা দত্ত (৪৯), যশোর শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ পাড়ার ভদ্র বিশ্বা’সের ছে’লে প্রদীপ বিশ্বা’স (৩৭), সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজে’লার প্রতাপপাড়া গ্রামের জামাল হোসেনের ছে’লে মিলন হোসেন (৩২),
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজে’লার সোনতলা গ্রামের মনোতোষ সর্দারের স্ত্রী’ শেফা’লী রাণী (৪০), খুলনার পাইকগাছার ভাম’রাইল গ্রামের আহম’দ সানার ছে’লে আমিরুল সানা (৫২), খুলনার রূপসা চল এলাকার শের আলীর ছে’লে সোহেল সরদার (১৭), খুলনা মহানগরের বিকে পূর্ব লেন এলাকার পু’লিন কৃষ্ণ সরকারের ছে’লে বিবেকান্দ সরকার ও রাজবাড়ি সদর উপজে’লার রামকান্তপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের মে’য়ে নাসিমা আক্তার। এদের মধ্যে মনিমালা, মিলন হোসেন, শেফা’লি রানী, আমিরুল সানা, সোহেল সরদার, বিবেকানন্দ সরকার ও নাসিমা আক্তার ভা’রত ফেরত।
করো’না ওয়ার্ডে দায়িত্বরত একজন সিনিয়র নার্স বলেন, করো’নাভাই’রাসে আ’ক্রান্ত হয়ে আসা ১০ জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু রোববার সকালের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোর জেনারেল হাসপাতা’লের একাধিক ডাক্তার বলেন, করো’নার ভা’রতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে ‘পালিয়ে যাওয়া’ রোগীরা যদি ভা’রতীয় ভ্যারিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।
যশোর পু’লিশের মুখপাত্র ও অ’তিরিক্ত পু’লিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইস’লাম বলেন, পালিয়ে যাওয়া রোগীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার থা’না পু’লিশের সহযোগিতায় উ’দ্ধার করা হয়েছে। তাদের আবারও যশোর জেনারেল হাসপাতা’লে ভর্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একজনকে হাসপাতা’লে আনা হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, করো’না ওয়ার্ডের ১০ জন রোগী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে চলে গেছে। তাদের মধ্যে সাতজন ভা’রত ফেরত। বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে তাদের এ হাসপাতা’লে পাঠানো হয়েছিল। তাদের ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু তারা না বলে চলে গেছে। পু’লিশ তাদের অবস্থান চিহ্নিত করেছে। পু’লিশ সুপার আমাকে জানিয়েছেন তাদেরকে আবারও ভর্তি করা হবে। শয্যা প্রস্তুত রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, করো’না ওয়ার্ডে নার্স ও চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে নিরাপত্তা কর্মী ছিল না। গেট তালাবদ্ধ করা হয়নি। এজন্য রোগীরা চলে যেতে পেরেছে। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা নেই। তবে তালাবদ্ধ রাখলে এভাবে চলে যেতে পারত না। তবে যারা আ’ক্রান্ত তাদেরকে বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল।