‘আমা’র ছেঁড়া জামাটাই আপনাদের বাংলাদেশ’ নীলক্ষেতে হে’নস্তার শিকার তরুণী
নিউজ টাইমস ২১ ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুন ২০২২, ১:৫৮:০৬ অপরাহ্ন
রাজধানীর নীলক্ষেতের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এএফ রহমান হলের ফট’কের সামনে এক তরুণী যৌ’ন হয়’রানির শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় থা’নায় অ’ভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
পু’লিশ অ’ভিযু’ক্তকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই তরুণী। যেখানে একটি ছবি সংযু’ক্ত করে ও্ই তরুণী লিখেছেন, ‘এই যে আমা’র ছেড়া জামাটা দেখতেছেন, এটাই আপনাদের বাংলাদেশ!!’
ভুক্তভোগী তরুণী ফেসবুকে করা পোস্টে লিখেছেন, এই দেশে মে’য়েদের মলেস্ট হওয়া, হ্যারাস হওয়া, রে’প হওয়া, গালি খাওয়া স্বাভাবিক ভেবে মেনে থাকতে পারলে থাকেন, নাইলে এই রাগে দুঃখে ট্রমাটাইজ হয়ে সুই’সাইড করেন, ম’রে যান, যা খুশি করেন কিন্তু প্রতিরোধ কিংবা বিচারের আশা কইরেন না!!
একটা লোক বাইক নিয়ে রিকশার পেছন থেকে এসে আমা’র বুক খামচে টেনে হিচড়ে জামা ছিড়ে আমাকেই গালাগাল করতে করতে চলে গেলো, আশেপাশে একটা পু’লিশ নাই, একটা মানুষ এসে ধরলোনা আমা’র চি’ৎকার শুনে!! আমি কিচ্ছু করতে পারলাম না!! আমা’র শরীর এখনো কাঁপতেছে ভ’য়ে!!
গত কয়েকমাস যাবত আমি ভ’য়ংকরভাবে মেন্টালি আন্সটেবল। আজকেও আমা’র মনের অবস্থা ঠিক ছিলোনা। কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে বাসায় ফিরতেছিলাম। আমা’র এই ড্রেসে ঠিক কি খা’রাপ ছিলো যার কারনে এমন ঘটনা ঘটলো?!! পোশাকের দোষ দেওয়া মানুষগুলো সালোয়ার কা’মিজে একটা মে’য়েকে কি নিয়ে দোষ দিবে?? আমা’র সাথে এমনটা কেন হলো? কখনো ভাবিনাই আমা’র ঢাকাশহরে আমা’র সাথেই এমন কিছু হতে পারে!! একটা মানুষ আগায় আসলোনা!! একটা মানুষও না!!
এই দেশে থাকতে চাইলে বিনিময়ে রাস্তাঘাটে গায়ে হাত দেয়ার পারমিশন দিতে হবে??! নাকি এখন সন্ধ্যার পর বাসার বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিবো??! আর কারে গিয়ে বললে একটু স্বাভাবিক সিকিউরভাবে এদেশে বাঁচতে পারবো???
এ বিষয়ে তরুণী বলেন, ‘আমা’র হাতে মুঠোফোন ও কানে হেডফোন ছিল। আমা’র গলায় কোনো ধরনের গয়না ছিল না। এএফ রহমান হলের সামনে পেছন থেকে একটা মোটরসাইকেল আসে। আমা’র কানে হেডফোন এবং ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে বিষণ্ন থাকায় অন্য কোনো দিকে আমা’র মনোযোগ ছিল না। মোটরসাইকেলে থাকা হেলমেটধারী ওই ব্যক্তি হঠাৎ এক হাত মোটরসাইকেলে রেখে অন্য হাতে বাঁ পাশ থেকে আমা’র গায়ে হাত দেয়। জো’রে টান দেওয়ার কারণে আমা’র জামা ছিঁড়ে যায়। তখন আশপাশে অনেক মানুষ ছিল। আমি চি’ৎকার করলেও কেউ সেভাবে খেয়াল করেনি।’
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণে বিষণ্ন থাকায় মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটটিও খেয়াল করেননি। তিনি ধানমন্ডিতে ভাইয়ের বাসা থেকে রিকশায় করে পুরান ঢাকায় নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। তবে পু’লিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গো’লাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু উন্মুক্ত তাই পথচারীদের কেউ যদি কোনো বখাটের দ্বারা নি’পীড়নের শিকার হন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মানবিকতার দিক বিবেচনায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতা করবে। এরই মধ্যে আম’রা পু’লিশ প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেছি। বাকি বিষয়গুলো পু’লিশ প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’